ঢাকা, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ইং (দৈনিক দেশপ্রেম রিপোর্ট): আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের ওপর গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগ’ বিষয়ে কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, পুলিশ ও কোর্টসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী- সবকিছু ঠিকমতো যখন কাজ করবে, তখন মবের প্রকোপ কমে যাবে।
কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে আসিফ নজরুল বলেন, “আমরা এখন একটা চ্যলেঞ্জিং সময়ে বাস করছি, যে সময় বাংলাদেশের ইতিহাস অবিনাশ হয়েছে। পৃথিবীর বহু দেশে এমন কখনোই দেখি নাই। আপনারা কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সহস্র হত্যাকাণ্ড দেখেছেন। হাজার হাজার তরুণ ছাত্রের অঙ্গহানির ঘটনা দেখেছেন। আপনারা নিশ্চয়ই অনেকে অনেক ফুটেজ দেখেছেন। দেখলে মনে হয় যেন গাজার মতো ইসরাইলি বাহিনী হত্যা করছে। একটা ভিডিও গেম খেলা হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “আমরা এমন সময় কখনো পাই নাই, যখন বাংলাদেশে ১৫টা বছর ফ্যাসিস্টের শাসন ছিল। আমরা এরকম সময় কখনো পাই নাই যেখানে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠানগুলোর এরোসন হয়েছে।”
তিনি বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, “আমাদের যারা জজ আছেন তাদের কাছে আমাদের অনুরোধ আপনারা হুটহাট করে জামিন দেবেন না।”
“জামিন পাওয়ার পরে একজন মানুষ দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য যদি ভয়াবহ হয়ে ওঠে, যদি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে একই অপরাধ আবার করার চেষ্টা করে তাহলে জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে আপনাদের বিচার্য বিষয় হওয়ার কথা। আবার যিনি জামিনের যোগ্য গত আমলের মতো তাকেও জামিন থেকে বঞ্চিত করবেন না। ওভার অল যে সিচুয়েশন সেটা মাথার মধ্যে রাখবেন।” বলেন আইন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “আমরা খুব চ্যালেঞ্জিং সময় অতিবাহিত করছি। পুলিশ ভাইয়েরা অত্যন্ত কষ্ট করে একটা হত্যা মামলার আসামিকে যখন ধরে আনে, জুলাই গণহত্যা মামলার আসামি সেখানে অবশ্যই জামিন দেয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে, এই আসামিগুলো বেরিয়ে একটা বিচার প্রক্রিয়াকে কতটা বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এখানে আপনাদের (বিচারক) রিলাক্স হওয়ার কোনো সুযোগ নাই। এটা অবশ্যই আপনারা মাথায় রাখবেন। যারা এখানে প্রসিকিউটর আছেন আপনারা লক্ষ্য রাখবেন, অনেক সময় পুলিশের রিপোর্টে যথেষ্ট তথ্য না থাকলে বা আদালত যদি যথেষ্ট পরিমাণ ওয়াকিবহাল না থাকে অনেক তথ্য দিয়ে, যুক্তি দিয়ে পরামর্শ দিয়ে দায়িত্ব পালন করার স্কোপ আপনাদের রয়েছে।”
ডিসিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “এখানে ডিসি যারা রয়েছেন আপনারা জেলা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধান। প্রসিকিউটরের সাথেও আপনাদের বিভিন্ন যোগাযোগ থাকে। আমরা মনে করি, এই চারটা প্রতিষ্ঠান যদি সমন্বয় করে একসঙ্গে কাজ করে তাহলে বর্তমান চ্যালেঞ্জিংটা আরও সাকসেসফুললি মোকাবেলা করতে পারব। আমাদের এখানে গণহত্যা হয়েছে সেটা মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। ১৫ বছর গুম হয়েছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়েছে, অরাজকতা হয়েছে এগুলো বানানো কথা না। আপনারা প্রত্যেকে জানেন। নিজেদের বিবেককে জিজ্ঞাসা করেন।”
Leave a Reply