ঢাকা, ২১ এপ্রিল ২০২১ইং (দেশপ্রেম রিপোর্ট): মহামারি করোনাভাইরাস থেকে সেরে ওঠার পথে দেশের জনপ্রিয় লালনসংগীত শিল্পী ফরিদা পারভীন। বর্তমানে তার শরীরে করোনার কোনো উপসর্গ নেই। ফুসফুস ও কিডনির সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে। যার কারণে মঙ্গলবার মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ছুটি নিয়ে তিনি বাসায় ফিরে গেছেন। এখন বাসায় থেকেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নেবেন এই শিল্পী। গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান ফরিদা পারভীনের জামাতা সাজ্জাদুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘আম্মা এখন ভালোই আছেন। স্বাভাবিকভাবে খাওয়া-দাওয়া করছেন। করোনার কোনো ধরনের উপসর্গ নেই। তবে এখনো করোনা ফলাফল নেগেটিভ কি না তা জানা যায়নি। শিগগিরই টেস্ট করানো হবে। আশা করি, ফল নেগেটিভ আসবে।’ সপ্তাহখানেক পর ফলোআপের জন্য আবার ডাক্তারের কাছে যেতে হবে বলেও তিনি জানান।
অসুস্থ বোধ করায় গত ৭ এপ্রিল করোনা পরীক্ষা করান একুশে পদকপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন। সেই রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তবে সে সময় তার তেমন কোনো শারীরিক সমস্যা ছিল না। শুধু কিছুটা শ্বাসকষ্ট ছিল। তাই বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। কিন্তু ধীরে ধীরে শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে গেলে ৬৭ বছর বয়সী এই কণ্ঠশিল্পীকে গত ১২ এপ্রিল তাকে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ফরিদা পারভীন মূলত পল্লীগীতি গানের জন্য বিখ্যাত। পাশাপাশি লালনসংগীতের জন্যও তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়। ১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর তার জন্ম নাটোরে হলেও বড় হয়েছেন কুষ্টিয়ায়। ১৯৬৮ সালে তিনি রাজশাহী বেতারে নজরুল সংগীতের জন্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে দেশাত্মবোধক গান গেয়েও বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
এই কণ্ঠশিল্পীর জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে ‘এই পদ্মা, এই মেঘনা, এই যমুনা-সুরমা নদীর তটে’ ‘তোমরা ভুলেই গেছো মল্লিকাদির নাম’, ‘নিন্দার কাঁটা যদি না বিঁধিল গায়ে প্রেমের কী সাধ আছে বলো’, ‘খাঁচার ভিতর’, ‘বাড়ির কাছে আরশি নগর’ ইত্যাদি।
সংগীতাঙ্গনে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৮৭ সালে ফরিদা পারভীনকে একুশে পদক দেয় বাংলাদেশ সরকার। ২০০৮ সালে তিনি জাপান সরকারের পক্ষ থেকে পান ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কার। এছাড়া সেরা প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবে ১৯৯৩ সালে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও লাভ করেন।
Leave a Reply