হেলথ ডেস্ক, ১০ এপ্রিল ২০২০ইং (দেশপ্রেম রিপোর্ট): করোনাভাইরাসে আটজন শনাক্তের পর মরণব্যধি এই রোগের বিস্তাররোধে অবশেষে গাইবান্ধা জেলাকে লকডাউন হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গাইবান্ধা করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন।
তিনি বলেন, গাইবান্ধাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। যা আজ শুক্রবার বিকাল ৫টা থেকে কার্যকর হবে। ফলে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত গাইবান্ধা থেকে কেউ অন্য কোন জেলায় গমন করতে পারবেন না এবং জেলার অভ্যন্তরে আন্তঃউপজেলা যাতায়াতের ক্ষেত্রেও একইরকম নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।
করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির সভা সূত্রে জানা গেছে, প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ঝুঁকি মোকাবিলায় গাইবান্ধা করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটি সভা গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হয়। সভার সিদ্ধান্ত ও গাইবান্ধার সিভিল সার্জন ডা. এবিএম আবু হানিফের সুপারিশক্রমে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনাক্রমে গাইবান্ধা জেলাকে অবরুদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে জরুরি পরিসেবা যেমন চিকিৎসা, খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ ও সংগ্রহ ইত্যাদি এর আওতা বহির্ভূত থাকবে। জনসাধারণের সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণে ইতোপূর্বে জারিকৃত সকল আদেশ বলবৎ থাকবে। এ আদেশ অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গাইবান্ধায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেয়, গত ২২ মার্চ। সেদিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী দুজন মা ও ছেলে শনাক্ত হন এই ভাইরাসে। পরে তাদের দুজন থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে আরও তিনজনের শরীরে। এই তিনজনের মধ্যে দুজনকে শনাক্ত করা হয় ২৭ মার্চ ও আরেকজনকে শনাক্ত করা হয় ৪ এপ্রিল। সর্বশেষ ৯ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত তিনজনের তথ্য জানায় ঢাকায় সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। সবমিলে গাইবান্ধায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আটজনে।
গাইবান্ধায় তিন উপজেলার পাঁচজন করোনাভাইরাসে আক্রান্তের পর থেকেই গাইবান্ধাকে লকডাউনের দাবি জানিয়ে আসছিল গাইবান্ধাবাসী। এরপর শুক্রবার গাইবান্ধাকে লকডাউন ঘোষণা দেয়া হলো।
গাইবান্ধার সিভিল সার্জন ডা. এবিএম আবু হানিফ বলেন, আমাদের হিসাবে এখনো পাঁচজন আছে। তবে ঢাকার রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) বৃহস্পতিবার আরও নতুন যে তিনজন আক্রান্তের কথা বলছে, সেই তিনজন হতে পারেন অন্য কোন জেলায় বসবাসরত গাইবান্ধার বাসিন্দা। আমরা খোঁজ নিচ্ছি।
ডা. আবু হানিফ আরও বলেন, আক্রান্ত পাঁচজনের মধ্যে চারজনকে গাইবান্ধার সরকারি দুইটি হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে এবং আরেকজনকে আইইডিসিআরের পরামর্শক্রমে বাড়িতে আইসোলেশনে চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। এই পাঁচজনের মধ্যে একজনের বিষয়ে শিগগির সুখবর আসছে বলেও জানান সিভিল সার্জন।
Leave a Reply