ঢাকা, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ইং (দেশপ্রেম রিপোর্ট): আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তাকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিয়ে গেছেন। দলের প্রেসিডিয়ামও তাতে সমর্থন দিয়েছে।
কাদের বলেন, “রওশন এরশাদ আমার মায়ের মতো। তিনি নিজ মুখে তো আর বলেন নাই যে তিনি চেয়ারম্যান। তাকে সম্মান করি। আশা করি, তিনি এমন কিছু করবেন না, যাতে তার সম্মান নষ্ট হয়।” প্রেসিডিয়ামের সদস্যদের অধিকাংশদের সমর্থন নিয়েই তাকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা করা হয়েছে এবং দলীয় এমপিদের অধিকাংশের সমর্থন নিয়েই সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে নাম ঘোষণার জন্য স্পিকারকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করেন জি এম কাদের।
এ সময় রওশনপন্থিদের সতর্ক করে বলেন, “যারা শৃঙ্খলা নষ্ট করেছে, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
২০১৬ সালের সর্বশেষ সংশোধিত গঠনতন্ত্রের ২২ নম্বর ধারা উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘পার্টির চেয়ারম্যান পার্লামেন্টারি পার্টির আস্থাভাজন ব্যক্তিদের মধ্যে পার্লামেন্টারি পার্টির নেতা নির্বাচিত হবেন। পার্লামেন্টারি পার্টির নেতা যিনি হবেন তিনিই আমাদের বিরোধী দলীয় নেতা হবেন, এটাই স্বাভাবিক।
‘এখানে পার্লামেন্টারি পার্টির কোনো মিটিং (সভা) করার বিষয় উল্লেখ করা হয়নি। চেয়ারম্যান যাকে আস্থাভাজন বলে মনে করবেন তিনিই হবেন। আমার প্রতি কাদের আস্থা আছে তা জানার জন্য সাংসদদের সঙ্গে কথা বলেছি। ১৫ জন আমার প্রতি আস্থা রেখেছেন। তারা বলেছেন যে, গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে আমরা বিরোধী দলীয় নেতা দেখতে চাই। তখনই আমি এই পত্রটি স্পিকারের কাছে পাঠিয়েছি। এটা গঠনতন্ত্র মোতাবেক হয়েছে। সেখানে কোথাও পার্লামেন্টারি পার্টির সভা করা বা সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলা হয়নি।
কাদের বলেন, এরশাদ একটি সাংগঠনিক নির্দেশ দিয়ে গেছেন। সেখানে তিনি বলে গেছেন, আমার অবর্তমানে আমার ছোট ভাই গোলাম মোহাম্মদ কাদের জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। ওনার মৃত্যুর পূর্বে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে আমাকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেন। তার মৃত্যুর পর কী হবে সে হিসেবে আমাকে তিনি তাঁর স্থলাভিষিক্ত হিসেবে ঘোষণা করেন। সর্বশেষ ১৭ আগস্ট তাঁকে সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা করার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয় বলেও জানান কাদের।
এর ঘণ্টাখানেক আগেই রওশনের উপস্থিতিতে তার বাসভবনে একটি সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় পার্টির আরেক অংশ। সেখানে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, “রওশন এরশাদ পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। আগামী ছয় মাসের মধ্যে কাউন্সিল করে গণতান্ত্রিক উপায়ে স্থায়ী চেয়ারম্যান ঠিক করব।”
এ সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, সালমা ইসলাম, এস এম ফখর-উজ-জামান জাহাঙ্গীর, মোস্তাফিজার রহমান মোস্তাফা, রানা মোহাম্মদ সোহেল উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে রওশন এরশাদের সংবাদ সম্মেলনে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ছাড়াও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু, মজিবুল হক চুন্নু, ফখরুল ইমাম, মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা, এসএম ফয়সল চিশতী, মীর আবদুস সবুর আসুদ, খালেদ আখতার, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, ভাইস চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন খোকা ও নাসিম ওসমান উপস্থিত ছিলেন।
দলের মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁকে কোনো সংবাদ সম্মেলনেই দেখা যায়নি। তার কোনো বক্তব্যও তাৎক্ষণিকভাবে সংবাদ সম্মেলনে আসেনি।
Leave a Reply