ঢাকা, ২৯ মে ২০১৯ইং (দেশপ্রেম রিপোর্ট): আজ বুধবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৮তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বিএনপির শীর্ষ নেতা মওদুদ আহমদ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘আমাদেরকে আপনারা নেতা বলেন আর যাই বলেন, ব্যর্থ হয়ে থাকলে আমাদেরকে সরিয়ে নতুন নেতৃত্বের ব্যবস্থা করুন। কিন্তু দলটাকে শক্তিশালী রাখতে হবে।’দলকে শক্তিশালী করতে প্রয়োজনে নিজেকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দিলেও আপত্তি করবেন না ।
মওদুদ আহমদ বলেন, ‘যে সংসদকে আমরা প্রত্যাখ্যান করলাম, যে নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করলাম, যে সংসদকে অবৈধ বললাম সেই সংসদে আমাদের যোগ দেয়ার কারণে দলের অনেক নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। এ বিভ্রান্তি দূর করতে হবে। এই ধরনের ক্ষোভ থাকা ভালো না। এই ক্ষোভ যদি আমরা দূর করতে না পারি তাহলে জাতীয়ভাবে আমাদের রাজনীতিকে সামনে এগিয়ে নিতে পারবো না।’
মওদুদ বলেন, ‘আমরা জাতীয় পর্যায়ে রাজনীতি সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে বা পরিচালনা করতে না পারলে আমরা শহীদ জিয়াউর রহমানের এই দলকে সুসংগঠিত করতে পারবো না। এখন বিএনপির জন্য একটি বিরাট সংকটকাল। আমাদের নেত্রী অসুস্থ এবং কারাগারে।’‘আজকে নয়, কালকে বেগম জিয়ার মুক্তি হবে এবং তিনি আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। কিন্তু তিনি এই মুহূর্তে কারাবন্দি, তিনি আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারছেন না, আমরাও তার সাথে যোগাযোগ করতে পারছি না। তিনি (খালেদা জিয়া) আমাদের নেতৃত্ব দিতে পারছেন না। আমাদের নেতা, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (তারেক রহমান) প্রায় আট হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছেন। আর দেশে চলছে একদলীয়, নিষ্ঠুর, স্বৈরাচারী শাসন। তাই এখন সর্বত্র জুড়ে প্রয়োজন ঐক্য বজায় রাখা।’
নির্বাচনের পর দলের ভূমিকার কথা স্মরণ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনের পরে দলীয়ভাবে আমরা নির্বাচনের ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করেছিলাম এবং সংসদকে অবৈধ ঘোষণা করে ছিলাম। সেজন্য আমরা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করিনি। আর যারা অংশগ্রহণ করেছিল প্রায় ২০০ জন তাদেরকে আমরা বহিষ্কার করেছি। গত নির্বাচনে আমাদের শত শত নেতাকর্মী আহত হয়েছেন, পঙ্গু হয়েছেন, জেল খেটেছেন এমনকি অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন। কিন্তু সংসদে যোগদান করার কারণে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি বিরাট ক্ষোভ এবং বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।’
মওদুদ বলেন, ‘সকল শ্রেণির মানুষের মধ্যে বিএনপির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এই প্রশ্নের উত্তর আমাদেরকে দিতে হবে এই প্রশ্নের উত্তর যদি আমরা দিতে পারি তাহলে শহীদ জিয়ার দলকে আমরা সুসংগঠিত করতে পারবো।’ ‘আমি মনে করি অবিলম্বে আমাদেরকে একটি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে হবে। এই ভেদাভেদ, ক্ষোভ দূর করার জন্য সকল অঙ্গ সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল, যুবদল স্বেচ্ছাসেবক দলসহ জাতীয় নির্বাহী কমিটি ডেকে আলোচনার মাধ্যমে আমাদের ভুল বোঝাবুঝি দূর করা।’
একই অনুষ্ঠানে স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বিএনপিকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘গঠনতন্ত্র মোতাবেক দলকে সুসংগঠিত করতে হবে। জিয়াউর রহমানের আদর্শ ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সংগঠন পরিচালনা করতে হবে। ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।’ আমরা যদি গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলকে সুসংগঠিত করি, বিএনপির আদর্শ ও দর্শনকে তরুণ প্রজন্মের কাছে, প্রকৃতপক্ষে তাদের উপলব্ধিতে ঢুকিয়ে দিতে পারি, তবে আমাদের পক্ষে অনেক কিছুই সম্ভব।
Leave a Reply