ঢাকা, ০২ মে ২০২০ইং (দেশপ্রেম রিপোর্ট): আজ শনিবার সকালে ঢাকা মহানগর যুবদল উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেনের উদ্যোগে উত্তরখান থানায় ত্রাণ বিতরণের সময় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশ যখন মহামারিতে বিপর্যয়ে পড়ে তখন আওয়ামী লীগ আলাদিনের চেরাগ পেয়ে যায়। তাদের ভাগ্য খুলে যায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুইটা লাঠির উপর দিয়ে হাঁটছেন দাবি করে তিনি বলেন, ‘এ দুইটা লাঠি হলো একটা নিজের দল আওয়ামী লীগ আর একটা আমলাতন্ত্র। নিজের দল শুধু লুটেপুটে খাও, চেটেপুটে খাও। আর আমলাতন্ত্র হচ্ছে সরকারের অদক্ষতা ও দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত করা।’
ক্ষমতাসীন দলের নেতারা ত্রাণ আত্মসাৎ করছে দাবি করে রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে ঘরের মধ্যে, খড়ের পালার মধ্যে চাল, খাটের মধ্যে তেল পাওয়া যাচ্ছে। জনগণের টাকায় কেনা ত্রাণ ক্ষমতাসীন দলের চেয়ারম্যান মেম্বার এবং আওয়ামী লীগের নেতারা আত্মসাৎ করছে। প্রতিদিন সারাদেশে ত্রাণের চাল ডাল তেল ধরা পড়ছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িতে। দেশ যখন মহামারিতে বিপর্যয়ে পড়ে তখন আওয়ামী লীগ আলাদিনের চেরাগ পেয়ে যায়। তাদের ভাগ্য খুলে যায়।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, জনগণের টাকায় কেনা ত্রাণ আত্মসাৎ করে তারা নিজেদের পকেট ভারি করছে আর মানুষ না খেয়ে হাহাকার করছে। এভাবে দেশ চলতে পারে না। আজকে গণতন্ত্র ও জবাবদিহিতা নেই বলেই সরকার এসব অন্যায় অনিয়ম করতে পারছে।
রিজভী বলেন, সরকারের অন্যায় অনিয়মের প্রতিবাদ করলে সমস্যা। করোনা মোকাবেলায় সরকারের ব্যবস্থাপনা অপ্রতুল। মুগদা জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ ধরনের একটা সত্য কথা বলায় তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। অনেক ডাক্তারদের বহিষ্কার করা হয়েছে। অথচ করোনায় বেশি আক্রান্ত হয়েছেন ডাক্তার, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সরকারের ত্রাণ বিএনপির নেতা-কর্মীরা না পেয়েও নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী পকেটের টাকায় অসহায়, গরিব, দিন আনে দিন খায় এমন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। প্রতিদিনই তাদের হাতে ত্রাণ তুলে দিচ্ছে। ঢাকা-১৮ আসনে এসএম জাহাঙ্গীর প্রতিদিনই অসহায় মানুষদের সহায়তা করছে। তার উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।
সরকারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, বিশ্বে ২১০টি দেশে করোনা মহামারি ছড়িয়েছে। এরকম মহামারী আমরা কখনো দেখিনি। গল্প শুনিনি। এরকম পরিস্থিতিতে সরকারের যে প্রস্তুতি নেওয়া দরকার ছিল তা সরকার গ্রহণ করেনি। তারা নিজেদের অন্য কাজে ব্যস্ত ছিল। প্রতিদিনই করোনা আক্রান্ত সংখ্যা এবং মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারের লকডাউন আগে করা উচিত ছিল। এবং বাড়িতে বাড়িতে খাদ্য পৌঁছে দেওয়া দরকার ছিল। আগাম প্রস্তুতির কারণে ভিয়েতনাম, ভুটানসহ অন্যান্য দেশে করোনায় আক্রমণ ঘটাতে পারেনি। আমাদেরও যথেষ্ট সময় ছিল কিন্তু সরকার অন্য জায়গায় মনোযোগ দেওয়ায় দেশে এখন মহামারি আকার ধারণ করছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রতিদিন ব্রিফিং করে যে তথ্য দেয় এই তথ্য সঠিক নয়। করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার আরও বেশি। ঊর্ধ্বগামী সংক্রমণের মধ্যে পড়েছে। এটা নিরাময়ের জন্য সরকার কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
ত্রাণ বিতরণের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উত্তরখান থানা বিএনপির সভাপতি আহসান উদ্দিন আহসান, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর বেপারী, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোতালেব হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক নূর মোহাম্মদ নুরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুকুল সরকার, উত্তরখান থানা যুবদলের সভাপতি রোস্তম আলী, সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক, উত্তরখান থানা ছাত্রদলের সভাপতি আনোয়ার সরকার প্রমুখ।
Leave a Reply