বিশ্বকাপের শুরু থেকেই ব্যাট হাতে যেরকম ছন্দে আছেন, পুরো ক্যারিয়ারেই বোধহয় এতটা ধারাবাহিক ছিলেন না আর কখনো। সেটির প্রতিফলন পড়েছে পরিসংখ্যানেও। আয়ারল্যান্ড সিরিজ থেকে শেষ নয় ইনিংস ৫৪, ৬১*, ২৯, ৫০*, ৭৫, ৬৪, ১২১, ১২৪*। এর মাধ্যমে বিশ্বকাপে দলের প্রথম চার ইনিংসেই পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলা মাত্র চতুর্থ ক্রিকেটার হয়ে গেছেন সাকিব। এর আগে ১৯৮৭ বিশ্বকাপে নভজ্যোৎ সিং সিধু, ১৯৯৬ বিশ্বকাপে শচীন টেন্ডুলকার ও ২০০৭ বিশ্বকাপে গ্রায়েম স্মিথ আর ২০১৫ বিশ্বকাপে কুমার সাঙ্গাকারা টানা চার ইনিংসে ৫০ কিংবা এর বেশি রান তোলেন। এর মধ্যে সাঙ্গাকারা তো টানা চার সেঞ্চুরির অবিশ্বাস্য কীর্তি গড়েছেন।
ব্যাটে-বলে সমান অবদান রাখতে পারেন, এমন বিরল সব অলরাউন্ডারদের একজন সাকিব। গতকাল অপরাজিত ১২৪ রানের ইনিংস খেলার পথে তামিম ইকবালের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডেতে ৬ হাজার রানের মাইলফলক পেরিয়ে যান সাকিব। ৬ হাজার রান ছুঁতে সাকিবের লেগেছে ১৯০ ইনিংস। বীরেন্দর শেবাগ ও শিবনারায়ণ চন্দরপলদের মতো ব্যাটসম্যানদেরও ওয়ানডেতে ৬ হাজার করতে সাকিবের সমান ইনিংস লেগেছিল। কুমার সাঙ্গাকারা, অরবিন্দ ডি সিলভা, যুবরাজ সিংয়ের মতো ব্যাটসম্যানদেরও ৬ হাজার রানে পৌঁছাতে এর চেয়ে বেশি ইনিংসে ব্যাট করতে হয়েছে। বোলিংয়েও সাকিব কম যান না। ওয়ানডেতে ২৫০ উইকেট পূরণ করতে মাত্র ১৯৯ ম্যাচ লেগেছে সাকিবের, যা কি না চামিন্দা ভাস ও কপিল দেবের মতো বোলারদের চেয়েও দ্রুত। আরেকটি জায়গায়ও অনবদ্য সাকিব। ওয়ানডেতে ৬ হাজার রান ও ২৫০ উইকেটের ডাবলে পৌঁছানো দ্রুততম ক্রিকেটার এখন সাকিব।
ডাবল পূর্ণ করতে সাকিবের লেগেছে মাত্র ২০২ ম্যাচ। এর আগে রেকর্ডটির মালিক ছিলেন শহীদ আফ্রিদি, লেগেছিল ২৯৪ ইনিংস। জ্যাক ক্যালিসের লেগেছিল ২৯৬ ইনিংস, আর সনাথ জয়াসুরিয়ার লেগেছিল ৩০৪ ইনিংস। বিশ্বকাপে টানা দুই সেঞ্চুরি নেই খুব বেশি ক্রিকেটারের। গতকালের সেঞ্চুরি দিয়ে মার্ক ওয়াহ, কুমার সাঙ্গাকারা, রাহুল দ্রাবিড়দের মতো কিংবদন্তিদের কাতারে নাম লেখালেন সাকিবও। সাকিবের আগেই অবশ্য গত বিশ্বকাপে এই তালিকায় নিজের নাম উঠেছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের। গতকাল ৮৩ বলে সেঞ্চুরি করেছেন সাকিব।
এ বিশ্বকাপে যেটি দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের হয়ে বিশ্বকাপে দ্রুততম সেঞ্চুরিও এটি। সাকিব ভেঙেছেন নিজের রেকর্ডই। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আগের ম্যাচে ৯৫ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন। গতকালের ইনিংসের মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় শীর্ষস্থানটা আবারো পুনরুদ্ধার করলেন সাকিব। পেছনে ফেলেছেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চকে। জো রুট ও রোহিত শর্মার সমান দুই সেঞ্চুরিতে সাকিবের রান এখন ৩৮৪। বিশ্বকাপে এখনো অন্তত চারটি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে এক বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি মাহমুদুল্লাহর কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছেন সাকিব। গত বিশ্বকাপে দুই সেঞ্চুরিতে ৩৬৫ রান করেছিলেন মাহমুদুল্লাহ।
Leave a Reply