ঢাকা, ৩১ মে ২০১৯ইং (দেশপ্রেম রিপোর্ট): আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল আয়োজিত আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, একাদশ সংসদে যোগ দিতে বিএনপির পাঁচজন সংসদ সদস্যের ওপর যতটা না চাপ ছিল তার থেকে এদের লোভ বেশি ছিল। ‘আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল সংসদে যাব না। কিন্তু সংসদে গেলাম। এখানেই তো বুঝতে হবে, আমাদের প্রতিশ্রুতির অভাব আছে। আমরা অবাধ্যকে বাধ্য করতে পারি না।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গয়েশ্বর বলেন, ‘এই বিষয়গুলো আপনাদের বুঝতে হবে। এখন এই পাঁচজন যদি দল ছেড়ে চলে যেত তারা যেতই। সেই কারণে আপনাকে প্রেক্ষাপটটা বুঝতে হবে। এদের লোভ আছে, এদের ওপর চাপ আছে। তবে চাপের চেয়ে লোভ বেশি। এরা একটা দিনের জন্য বলেছে যে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্ত না হলে সংসদে যাব না? এই পাঁচজনের কেউ বলেছেন এক দিন? কেউ বলছেন? বলেন নাই। তাহলে তাদের সংসদে যাওয়াটা জরুরি। বেগম জিয়ার মুক্তিটা কিন্তু জরুরি না।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল সংসদে যাব না। কিন্তু সংসদে গেলাম। এখানেই তো বুঝতে হবে, আমাদের প্রতিশ্রুতির অভাব আছে। আমরা অবাধ্যকে বাধ্য করতে পারি না। কারণ, ওই পাঁচজনের দলের প্রতি, রাজনীতির প্রতি অঙ্গীকার নেই। এই পাঁচজন অবাধ্যকে যদি আমরা বাধ্য করতে পারতাম, তাহলে আজকে আমাদের দুঃখ থাকত না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আমরা বেশি কাজে ফাঁকি দিই। আমরা কমিটি করি। কিন্তু কেউ সংগঠন করি না। একটি কমিটি মানেই সংগঠন না। আর নেতৃত্বের যেখানে দুর্বলতা হয়, সেখানে বহুজনের কমিটি হয়। কমিটিতে যখন যুগ্ম আহ্বায়কের সংখ্যা বেশি, সদস্যসচিব থাকে, তখনই বুঝতে হবে, কেউ কাউকে মানে না। তার মানে অঙ্গীকারের অভাব। সংগঠনের চেয়ে নিজেকে সবাই বড় মাপের দেখতে চায়।’
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমানকে কি আমরা অনুসরণ করেছি? তাকে যদি আমরা অনুসরণ করি, তাহলে আমাদের ভাগ্যের চাকা ঘোরে না। আমরা গাড়ি-বাড়ির মালিক হতে পারি না। কারণ, ওনার রাজনৈতিক জীবনে গাড়ি-বাড়ি ও বিত্তশালী হওয়ার কোনো অনুপ্রেরণা ছিল না। ওনার রাজনীতি ছিল দেশপ্রেম ও দেশের মানুষকে জাগিয়ে তোলা।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘যারা উপদেশ দেন, তারা নিজের বেলায় সেটা কতটুকু বাস্তবায়ন করেন, তা একটু ভেবে দেখবেন। আর দলের উপদেষ্টা-সম্পাদক বেশি, কর্ম-সম্পাদকটা একটু কম। বলা হয়, ঘরে বসে মিটিং করব না। কিন্তু ঘরেই ডাকা হয়। আর আজকে ঘরে না ডেকে যদি বাইরে ডাকা হতো, তাহলে খুব বেশি ভালো লাগত।’
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আইন আছে আইনের প্রয়োগ নাই। বিচার বিভাগ যদি স্বাধীন হতো বিবেকতাড়িত হতো খালেদা জিয়াকে ১৪ মাস না ১৪ দিনও জেলে থাকতে হতো না। আমি ধরে নিলাম উনার সাজা হয়েছে। এরকম সাজাপ্রাপ্ত লোকের সংখ্যা বাংলাদেশে শত শত হাজার হাজার। তারা জামিনে মুক্ত, কিন্তু খালেদা জিয়ার জামিন হচ্ছে না কেন?’
গয়েশ্বর আরও বলেন, ‘সম্প্রতি লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, তারেককে বেশি বাড়াবাড়ি না করতে। বাড়াবাড়ি করলে নাকি তার মাকে (খালেদা জিয়া) আর ছাড়া হবে না। তার মানেটাও তাহলে স্পষ্ট- বেগম জিয়াকে এখন কারাগার থেকে ছাড়ার মালিক আদালত নয়, স্বয়ং শেখ হাসিনা। এটা কি আদালত
অবমাননা নয়? আদালত কি শেখ হাসিনাকে তলব করেছেন? কেন লন্ডনে এমন বক্তব্য দিলেন সেটা কি জিজ্ঞেস করেছেন?’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ।
Leave a Reply