দৃষ্টি আকর্ষন
সব সময় সর্বশেষ সংবাদ জানতে দৈনিক দেশপ্রেম নিজে পড়ুন এবং অন্যকে পড়তে উৎসাহিত করুন ........... আপনার এলাকার যে কোন সংবাদ আমাদের ছবিসহ জানান-আমরা সেটি প্রকাশ করবো দৈনিক দেশপ্রেম পত্রিকায়, নিউজ পাঠান dailydeshprem@gmail.com এই ইমেইলে ............ আপনার পণ্যের খবর সকলের কাছে দ্রুত পৌছাতে দৈনিক দেশপ্রেম পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন ..........
শিরোনাম :
নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আবেদনের সময়সীমা দুই মাস বাড়ানো হলো আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ও উপদেষ্টা আসিফ-মাহফুজের পদত্যাগ চাইলেন সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সরকারি হলেন মোহাম্মদ সুফিউর রহমান শান্তিরক্ষী মিশনে আরও নারী সদস্য নিয়োগ দেওয়ার আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা একই ব্যক্তি সরকার প্রধান ও দলীয় প্রধান হতে পারবে না- এমন চর্চা আমরা দেখি না : বিএনপি বিএনপি বৈঠক করলো সিপিবি, বাসদসহ বাম নেতাদের সঙ্গে জাতীয় পার্টির রওশনপন্থিরা জি এম কাদেরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন করলো গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই, আর এটি কাউকে চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয় : মির্জা ফখরুল বিচার ও সংস্কারের জন্য যতটুকু সময় প্রয়োজন অন্তর্বর্তী সরকার ততটুকু সময় পেতে পারে : এনসিপি ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে নির্বাচন ইস্যুতে বিএনপির বৈঠক
সারা শরীরে বাঘের শরীরের আদলে পেইন্ট করে বিশ্বকাপে বাংলার ‘বাঘ’হলেন শোয়েব আলী

সারা শরীরে বাঘের শরীরের আদলে পেইন্ট করে বিশ্বকাপে বাংলার ‘বাঘ’হলেন শোয়েব আলী

স্পোর্টস ডেস্ক, ৩০ মে ২০১৯ইং (দেশপ্রেম রিপোর্ট): বাংলাদেশ ক্রিকেটের সুপারফ্যান শোয়েব আলী (৩১)। তিনি ঢাকায় একজন কার মেকানিক। খুব বেশি আয় নয় তার। কিন্তু স্বপ্ন তার বিশাল। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল যেখানে, সেখানেই হাজির শোয়েব আলী। তিনি সারা শরীরে বাঘের শরীরের আদলে পেইন্ট করেন। মুখও বাদ যায় না। এ জন্য খ্যাতি পেয়েছেন। সবাই তাকে এখন মডেল হিসেবে চেনেন। বাংলাদেশের ম্যাচের সময় টাইগাররা যখন মাঠের মধ্যে রণে লিপ্ত, তখন গ্যারারিতে হুঙ্কার ছাড়েন শোয়েব, যেন সুন্দরবনের বাঘ গর্জন করছে। তার এই নেশা মেটাতে গিয়ে অনেক সময় তাকে আহত হতে হয়েছে। উৎকোচ দিতে হয়েছে। সর্বোপরি তিনি সারাজীবনে যা সঞ্চয় করেছেন, তার সবটা খরচ করে দিতে কার্পণ্য করেন না। তাতে শোয়েব আলীর কোনো আক্ষেপ নেই। তিনি টাইগারদের খেলা দেখেন মাঠে বসে। তাদের উৎসাহ দেন, যেন বাংলাদেশকে উজ্জীবিত করেন।

তিনি মানেন খেলায় উত্থান-পতন আছে। জয় পরাজয় আছে। তাই বলে ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে তিনি থাকবেন না, তাই কি হয়! নিজেকে স্থির করেছেন। এই বিশ্বকাপেও তিনি ফিকচারে নিজেকে হাজির করছেন, যেখান রোববার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে লড়াই শুরু হচ্ছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশী ফাস্টবোলার শাহাদত হোসেনের গাড়ি মেরামত করে দিয়েছেন শোয়েব আলী। ওই শাহাদতই তার ক্রিকেট নেশা দেখে প্রথম খেলার একটি টিকেট দিয়েছেন শোয়েবকে। বিষয়টিকে ল্যান্ডমার্ক হিসেবে আখ্যায়িত করেছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

এর আগে এশিয়া কাপে ভারতকে ৫ উইকেটে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে যদিও শচীন টেন্ডুলকর দীর্ঘ প্রতীক্ষিত শততম সেঞ্চুরি করেছিলেন। এ বিষয়ে শোয়েব বলেন, ওই ম্যাচে বাংলাদেশ জেতার পর আমি গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে আনন্দ ধরে রাখতে পারি নি। অবিরাম কেঁদেছি। আনন্দেও মানুষ কাঁদে সেই প্রথম অনুভব করলাম। ওই সময় আমি ভারতীয় বিখ্যাত ফ্যান সুধীর গৌতমকে দেখতে পাই। তার শরীর ভারতের জাতীয় পতাকায় রাঙানো। তাকে ভারতের ম্যাচ হলেই সারাবিশ্বে দেখা যায়। তাকে দেখে আমিও সেদিন সিদ্ধান্ত নিলাম, আমিও তার মতো হবো। বাংলাদেশ যেখানেই খেলুক আমি সেখানে হাজির থাকবো।

শোয়েব আলী ১৩ বছর বয়সে স্কুল ছেড়ে দেন। তারপর থেকে তিনি দেশে মাত্র একটি খেলা মিস করেছেন। বিদেশে খুব একটা মিস করেন নি। ফলে বিষয়টি তার জীবনে নিয়ে আসে এক অ্যাডভেঞ্চার। শোয়েব আলী ২০১৩ সালে প্রথম বিদেশে বাংলাদেশে খেলা উপভোগ করেন। তিনি দেখতে পান শ্রীলঙ্কায় টেস্টে প্রথম পরাজয় ঠেকাতে বাংলাদেশকে। খেলাটি কৃতীত্বপূর্ণ ড্রতে শেষ হয়। ওই ম্যাচের আগে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কায় আটটি টেস্ট ম্যাচ হেরেছে। এর মধ্যে সাতটি হেরেছে ইনিংসে। ওই ম্যাচ দেখতে তিনি পকেটে মাত্র ২৫০ ডলার নিয়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কা। সেখানে শ্রীলঙ্কান এক ভক্তের সঙ্গে একটি গ্যারেজে ঘুমিয়েছেন বেশ কয়েক রাত। ওই সময় তাকে খাদ্য কেনার জন্য অর্থ দিয়েছিলেন বাংলাদেশী খেলোয়াড়রা ও কর্মকর্তারা।

কিন্তু বিপর্যয় ঘটে একই বছর জিম্বাবুয়ে সফরের সময়। শোয়েব আলী জিম্বাবুয়ে যাওয়ার সময় তার ভিসাসংক্রান্ত সব ডকুমেন্ট ফেলে যান ঢাকা বিমানবন্দরে। জিম্বাবুয়েরে হারারেতে, অভিবাসন বিষয়ক কর্তৃপক্ষ তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। তখনই কৌশল অবলম্বন শুরু করেন শোয়েব আলী। কি করেছিলেন ওই মুহূর্তে? শুনুন শোয়েব আলীর জবানিতে, শুধু একটি ফোনকল করার অনুমতি দিতে একজন কর্মকর্তার হাতে ১০ ডলার ঘুষ ধরিয়ে দিলাম। তারপর ফোনে বাংলাদেশ টিমের কর্মকর্তাদের জানালাম আমার অবস্থা। তখন তারা ছিলেন প্রশিক্ষণ মাঠে। প্রতিশ্রুতি দিলেন আমাকে কোনো সাহায্য করতে পারেন কিনা। তখন আমার মনে হলো, একজন অসুস্থ মানুষকে অভিবাসন বিষয়ক কর্মকর্তারা দেশে ফেরত পাঠাতে পারবে না। আমি দেয়ালের সঙ্গে সজোরে মাথা আঘাত করে পড়ে গেলাম। এমন অভিনয় করলাম যাতে তারা মনে করে আমি কিছু সময়ের জন্য বেহুঁশ হয়ে গেছি। শোয়েব বলেন, বিমানবন্দরেই একটি রাত কাটালাম। বাংলাদেশী কর্মকর্তারা আমার ডকুমেন্টে আনালেন এবং আমাকে নিয়ে গেলেন হারারে।

নিজের শরীরে, মুখে বাঘের মতো করে পেইন্ট ব্যবহার করার জন্য তার স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে তাকে। তা সত্ত্বেও শোয়েব আলী থামবেন না। তিনি মুখ, শরীরে রঙ লাগিয়ে নিজেকে ‘বাঘ’ বানিয়েই ছাড়বেন। সেই বাঘকে এবারও দেখা যাবে ইংল্যান্ডে। শোয়েব বলেন, অনেক মানুষ আমাকে সতর্ক করেছেন। বলেছেন, এভারে পেইন্ট করানোতে ত্বকের ক্যান্সার হবে। কিন্তু তাতে আমি কুচ পরোয়া করি না। আমার দেশের চেয়ে বড়, গুরুত্বপূর্ণ আর কিছু হতে পারে না।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© Copyright 2012 Daily Deshprem Design & Developed By Mahmud IT