ঢাকা, ৩১ আগষ্ট ২০১৯ইং (দেশপ্রেম রিপোর্ট): আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ শনিবার বলেছেন, আওয়ামী লীগের দিকে আঙ্গুল তোলার আগে বিএনপিকে তাদের আমলে হাজার হাজার মানুষ হত্যার জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মূল হোতাদের বিচারের মুখোমুখি করা উচিৎ।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি দেশব্যাপী গ্রেনেড ও পেট্রোল বোমা হামলা এবং আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। তাই হত্যাকান্ডের ইস্যুতে কথা বলার কোন অধিকার তাদের নেই।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি’র ১০ বছরের শাসনামলে কয়েকশ’ লোককে হত্যা করা হয়। তারা গ্রেনেড হামলা চালিয়ে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাণনাশের চেষ্টা চালায়। এখনো তাদের হাত রক্তে রঞ্জিত।’ বিএনপি বাংলাদেশে হত্যার রাজনীতি শুরু করে এবং জিয়াউর রহমান ক্ষমতা গ্রহণের জন্য সশস্ত্র বাহিনীতে নির্বিচারে হত্যাকান্ড চালান।২০১৩ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের পেট্রোল বোমা ও অগ্নি সন্ত্রাসের কথা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এই ধরনের বর্বরোচিত ও জঘন্য হামলার হোতাদের আইনের আওতায় আনা উচিৎ।
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী হাছান বর্তমান সরকারের আমলে শত শত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে বলে বিএনপি যে অভিযোগ করেছে, তা নাকচ করে দিয়েছেন। বিএনপি জামায়াত সন্ত্রাসীরা ইজতেমার মুসল্লীদের পুড়িয়ে মারে।
হাছান বলেন, ইজতেমার মুসল্লীকে পুড়িয়ে হত্যাসহ দু’বারের শাসনামলে বিএনপি সহস্রাধিক মানুষকে হত্যা করে। তারা চার হাজার গাড়ি ও ত্রিশটি লঞ্চ পোড়ায়, ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় তারা কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের বইসমেত ৫০০ স্কুলঘর পুড়িয়ে দেয়। পোড়া মানুষ আর পোড়া বইয়ের জন্য আহাজারিতে বাতাস ভারি হয়েছিল। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়া অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেই প্রায় ১ হাজার ৬শ’ সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করেন এবং তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলে হাজার হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যা করেন।’
তিনি আরো বলেন, বিএনপি পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে প্রায় ১ হাজার লোককে হত্যা করে। এই আগুন সন্ত্রাস থেকে তারা শিশু, অন্তঃস্বত্ত্বা নারী, পরিবহন চালক ও হেল্পারদেরও রেহাই দেয়নি। তারা আন্দোলনের নামে একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও পবিত্র কুরআনের কপিসহ নির্বিচারে হাজার হাজার যানবাহন, স্থাপনা ও সরকারি অফিসে অগ্নিসংযোগ করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে হত্যাকান্ড জাতির জন্য একটি লজ্জা। এ ব্যাপারে তিনি আরো বলেন, এ ব্যাপারে একটি কমিশন গঠন করে এই হত্যাকান্ডের নেপথ্যের কুশিলবদের সনাক্ত করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের সাথে জিয়ার সম্পৃক্ততা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত।
বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ (বিএসপি) এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। বিএসপি’র উপদেষ্টা জাকির আহমেদের সভাপতিত্বে এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম ও শামসুল হক টুকু এমপি, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রয় নন্দী।
অনুষ্ঠানে ঢাকা নগর আওয়ামী লীগের নেতা আখতার হোসেন, বলরাম পোদ্দার, এম এ করীম, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা, বিএসপি সভাপতি জিন্নাত আলি জিন্নাহ্ ও সাধান সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন তোয়েল বক্তব্য রাখেন।
বিএনপি’র রাজনৈতিক প্লাটফমর্কে হত্যাকান্ডের প্লাটফর্ম উল্লেখ করে এডভোকেট কামরুল বলেন, বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান হত্যার মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার পরও হত্যাকান্ড অব্যহত রাখেন। জিয়াউর রহমানের মতো তার স্ত্রী খালেদা জিয়াও নির্বিচারে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের হত্যার মাধ্যমে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন।
Leave a Reply