০১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ইং (দেশপ্রেম রিপোর্ট): টেকনাফের ইয়াবা গডফাদার হিসেবে পরিচিত ও যুবলীগ নেতা হত্যার প্রধান আসামি রোহিঙ্গা ডাকাত সর্দার নুর মোহাম্মদ পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন কর্মকর্তাসহ তিন পুলিশ সদস্য। রবিবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুড়া ২৭নং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পাহাড় এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধ হয়।
নিহত নুর মোহাম্মদ টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মৃত কালা মিয়ার ছেলে। সম্প্রতি রাজকীয়ভাবে মেয়ের কান ফোঁড়ানোর অনুষ্ঠান করে আলোচনায় এসেছিলেন নুর মোহাম্মদ। তার কিশোরী কন্যার কান ফোঁড়ানো অনুষ্ঠানে অতিথিরা উপহার হিসেবে প্রায় এক কেজি স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও ছাগল দিয়েছেন বলে জানা যায়।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, শনিবার বিকালে তদন্ত ওসি এবিএমএস দোহার নেতৃত্বে একদল পুলিশ টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুড়া ৯নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপিত মো. ওমর ফারুক হত্যার প্রধান আসামি ডাকাত নুর মোহাম্মদকে রঙ্গিখালী উলুচামারী পাহাড়ে ব্যাপক তল্লাশি চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে তাকে থানায় নিয়ে এসে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে তদন্ত ওসি এবিএমএস দোহার নেতৃত্বে পুলিশ জাদিমুড়া ২৭নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তার বসতবাড়ির পাশে পাহাড়ে অস্ত্র উদ্ধারে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আটক ব্যক্তির দলের লোকজন পুলিশের উপর গুলিবর্ষণ করে তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তাদের গুলিতে ওসি তদন্ত দোহা, কনস্টেবল আশেদুল (২১) ও অন্তর চৌধুরী (২১) আহত হন। এ সময় পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। পরে অস্ত্রধারী রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নুর মোহাম্মকে উদ্ধার করে টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নেয়া হয়। সেখানে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরোও জানান, ঘটনাস্থল থেকে ৪টি দেশীয় এলজি, একটি একনলা শুটারগান বন্দুক, ১৮ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, ১০ রাউন্ড খালি খোসা উদ্ধার করে পুুলিশ।
জানা যায়, ১৯৯২ সালে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা নূর মোহাম্মদ হ্নীলা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের জাদিমুরা এলাকায় এসে প্রথমে বাসা ভাড়া নিয়ে ছিলেন। ধীরে ধীরে সেখানেই জমি কিনে বাড়ির মালিক হন। এ পাড়ে আশ্রয় নেওয়ার পর ওপারের রোহিঙ্গাদের নিয়ে তিনি সীমান্তের বিশাল ডাকাত বাহিনী গড়ে তুলেন।”
অভিযোগ রয়েছে, নূর মোহাম্মদের ডাকাত বাহিনী অপহরণ, ডাকাতি, সন্ত্রাসী, ছিনতাই, মানবপাচার এবং সর্বশেষ সীমান্তের একচেটিয়া ইয়াবা চোরাকারবারও হাতে নেয়। ইতিমধ্যে দুই বছর আগে বাংলাদেশে লক্ষাধিক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পর নূর মোহাম্মদের ক্ষমতা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এলাকার ৫-৬টি রোহিঙ্গা শিবির, টেকনাফের বিস্তৃত পাহাড়, সীমান্তের নাফ নদী ও নদীর ওপারের রাখাইনের অভ্যন্তরে থাকা ইয়াবা কারখানা ও গবাদি পশুর বাজারসহ একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণে নেয় তারা। এসব কারণেই বাহিনীর সদস্যরা কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান।
Leave a Reply