ঢাকা, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ইং (দেশপ্রেম রিপোর্ট): ভূমি রেজিস্ট্রি অফিসে সেবা পেতে পাঁচশ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয় বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি। আজ সোমবার নিজেদের করা এক গবেষনা প্রতিবেদনের বরাতে এমনটাই দাবি করেছে সংস্থাটি। ঢাকার ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
‘সেবায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটিতে ভূমি দলিল নিবন্ধন করার ক্ষেত্রে জেলা রেজিস্ট্রার ও সাব রেজিস্ট্রার অফিসের অনিয়মের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, জেলা রেজিস্ট্রার ও সাব-রেজিস্ট্রার অফিসগুলোতে সেবা পেতে প্রতিটি পদক্ষেপে সেবাগ্রহীতাদের পাঁচশ থেকে শুরু করে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ভূমির দলিল ও নিবন্ধন সেবাখাতে ব্যাপক সুশাসনের ঘাটতি রয়েছে। এখাতে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপলাভ করেছে। সেবাখাত মানেই সুশাসনের ঘাটতি ও দুর্নীতিপ্রবণ।’
‘ভূমি রেজিস্ট্রি ও দলিল করার করার বিষয়ে দুর্নীতি যেন অনেকটা সমার্থক হয়ে গেছে। নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও ঘুষ লেনদেনের চিত্র পাওয়া যাচ্ছে। এমনও পাওয়া গেছে একজন সাব-রেজিস্ট্রারকে বদলি করতে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ লেনদেন হয়েছে।’
তবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আছে উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ভূমি দলিল নিবন্ধন অফিস ব্যতিক্রমও পেয়েছি। অনেক কর্মকর্তা জবাবদিহিতার সঙ্গে স্বচ্ছতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু সে সংখ্যাটি একবারেই নগন্য।’
ভূমি দলিল নিবন্ধন সেবাখাতে দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ন্ত্রণে দুটি বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হলে, দুর্নীতি-অনিয়মের জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
‘কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা থাকলে দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব। দুর্নীতির অংশীজনদের নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিং করা, দুর্নীতিপরায়নদের শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হলে সেবাগ্রহীতারা হয়রানি থেকে রক্ষা পাবেন।’
প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন প্রোগ্রাম ডেপুটি ম্যানেজার (রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি) শাম্মী লায়লা ইসলাম ও প্রোগ্রাম ম্যানেজার (রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি) নিহার রঞ্জন রায়। এসময় অন্যদের মধ্যে টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য সুলতানা কামাল, উপদেষ্টা (নির্বাহী) অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, পরিচালক (রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি) মোহাম্মদ রফিকুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply